
লাগামহীন দুর্নীতি, কাজ ও খাদ্যের অভাব, এবং সামাজিক সম্প্রীতির অবক্ষয়ের অভিযোগ এনে প্রতিবাদে সিপিআই(এম)-এর ডাকে বৃহৎ মিছিল ও জনসভা অনুষ্ঠিত হলো কৈলাসহরে। বৃহস্পতিবার বিকেলে, দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার মাঝেই মহকুমা কমিটির উদ্যোগে আয়োজিত এই কর্মসূচিতে বিপুল সংখ্যক গ্রামীণ শ্রমজীবী, নারী-পুরুষ এবং যুবসমাজের অংশগ্রহণ লক্ষ্য করা যায়।
গৌরনগর বাজার সংলগ্ন এলাকায় অনুষ্ঠিত জনসভায় সভাপতিমণ্ডলীতে ছিলেন রনজিৎ কুমার নাথ, গমতিরুং রিয়াং ও বাদশা মিয়া। সভায় বক্তব্য রাখেন সিপিআই(এম) পলিটব্যুরোর সদস্য এবং বিরোধী দলনেতা জীতেন্দ্র চৌধুরী, দলের জেলা সম্পাদক কৃষ্ণেন্দু চৌধুরী, রাজ্য কমিটির সদস্য বিশ্বরূপ গোস্মামী ও মহকুমা সম্পাদক অঞ্জন কুমার রায়।
সভায় মূল বক্তা জীতেন্দ্র চৌধুরী বলেন, “বিজেপি সরকারের আমলে রাজ্যে আজ চরম অরাজকতা চলছে। দুর্নীতি এমন স্তরে পৌঁছেছে যে পঞ্চায়েত থেকে মহাকরণ—টাকা না দিলে কোনও কাজই হচ্ছে না। সরকার চলছে কমিশনের অর্থে, আর মানুষ প্রতিশ্রুতি ভাঙনের শিকার।”
তিনি ত্রিপুরা জনজাতি স্বশাসিত জেলা পরিষদ (ADC)-এর বর্তমান অবস্থা নিয়েও তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তাঁর অভিযোগ, “তিপরা মথা সরকার ছয় বছর ক্ষমতায় থেকেও ভিলেজ কমিটির নির্বাচন করেনি। উপজাতিদের দুর্দশার সুযোগ নিয়ে চাকুরির নামে বিভ্রান্ত করছে বেকার যুবসমাজকে।” তিনি তুলনা করে জানান, “বামফ্রন্ট আমলে মাধ্যমিক অনুত্তীর্ণ উপজাতিদেরও চাকরির সুযোগ দেওয়া হয়েছিল, কিন্তু আজ উচ্চশিক্ষিত যুবকদের দেওয়া হচ্ছে পিওন বা ক্লাস ফোর স্তরের পদ।”
সভায় কৃষ্ণেন্দু চৌধুরী অভিযোগ করেন,“রেগা প্রকল্পে কাজের সংখ্যা দিন দিন কমছে। আগে যেখানে বছরে ৯০–৯৫ দিন কাজ হতো, এখন তা ৩০–৪০ দিনে নেমে এসেছে। মজুরি পেতেও বিলম্ব হচ্ছে।”
বিশ্বরূপ গোস্মামী বলেন, “মানুষকে ধর্ম ও জাতপাতের নামে বিভক্ত করে শাসন করছে কেন্দ্রীয় বিজেপি সরকার।”অঞ্জন রায় বলেন, “এই সরকার মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতাকে হরণ করছে। রাজ্যে চলছে প্রতারকদের শাসন।”সভা শেষে অংশগ্রহণকারীরা ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের আহ্বান জানিয়ে স্লোগানে মুখর করে তোলেন গোটা এলাকা।