প্রতিনিধি অনুপম পাল
কৈলাসহর,ঊনকোটি ত্রিপুরা
কৈলাসহর শহরে মশার উপদ্রব এখন চরমে পৌঁছেছে। দিন-রাত সমানভাবে মশার আক্রমণে সাধারণ মানুষের জীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে। বাড়িঘর, অফিস-আদালত, স্কুল-কলেজ—কোথাও স্বস্তি নেই। এমনকি দিনের বেলাতেও মানুষকে মশারির মধ্যে বসবাস করতে হচ্ছে, যা এক অস্বাভাবিক পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, মশার এই মাত্রাতিরিক্ত বিস্তারের মূল কারণ হলো শহরের নর্দমা ও ড্রেনগুলোর অপরিচ্ছন্নতা, যেখানে জমে থাকা জলে মশা নির্বিঘ্নে বংশবিস্তার করতে পারছে। এছাড়া, রাস্তার পাশের ঝোপঝাড়গুলো মশার জন্য আদর্শ আশ্রয়ে পরিণত হয়েছে। একসময় নিয়মিতভাবে শহরে ফগিং মেশিনের মাধ্যমে মশা দমনের ব্যবস্থা নেওয়া হতো, কিন্তু বর্তমানে সেই কার্যক্রম অনেকটাই অনিয়মিত হয়ে পড়েছে। ফলে, মশার সংখ্যা অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে।
মশার উপদ্রব শুধু দৈনন্দিন জীবনযাত্রায় অসুবিধা সৃষ্টি করছে না, বরং এটি শহরবাসীর জন্য মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করছে। ডেঙ্গু, ম্যালেরিয়া ও চিকুনগুনিয়ার মতো মশাবাহিত রোগের ঝুঁকি প্রতিনিয়ত বাড়ছে। বিশেষ করে, শিশু ও বয়স্কদের জন্য এই পরিস্থিতি অত্যন্ত বিপজ্জনক হতে পারে।
কৈলাসহর শহরের এই সমস্যা সমাধানে দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন। নাগরিকদের মতে, নিম্নলিখিত উদ্যোগ গ্রহণ করলে মশার উপদ্রব অনেকাংশে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব— নিয়মিতভাবে শহরের ড্রেন ও নর্দমাগুলো পরিষ্কার করা জরুরি, যাতে জমে থাকা নোংরা জলে মশার লার্ভা জন্মাতে না পারে। রাস্তার পাশে ও ফাঁকা জায়গায় থাকা ঝোপঝাড় পরিষ্কার করে সেখানে জীবাণুনাশক প্রয়োগ করতে হবে। শহরে নিয়মিতভাবে ফগিং মেশিন ব্যবহার করে মশা দমনের ব্যবস্থা করতে হবে। শহরের বিভিন্ন এলাকায় ব্লিচিং পাউডার ও লার্ভানাশক ওষুধ ছিটিয়ে মশার জন্ম ও বংশবৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। সাধারণ মানুষকে মশার বিস্তার রোধে সচেতন করতে হবে, যেন তারা নিজেদের আশপাশের পরিবেশ পরিষ্কার রাখে।
এই পরিস্থিতি মোকাবিলায় নগর কর্তৃপক্ষের পাশাপাশি সাধারণ নাগরিকদেরও দায়িত্ব রয়েছে। শহরের প্রতিটি মানুষকে নিজ নিজ এলাকায় মশার বিস্তার রোধে সক্রিয় ভূমিকা রাখতে হবে। একইসঙ্গে, সংশ্লিষ্ট প্রশাসনকে নিয়মিত মনিটরিংয়ের মাধ্যমে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে, যাতে মশা নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব হয়।
শহরবাসী স্বাস্থ্যকর পরিবেশে বসবাসের অধিকার রাখে। তাই কৈলাসহর পুর পরিষদের দ্রুত ও কার্যকর উদ্যোগের মাধ্যমেই এই সংকট সমাধান করা সম্ভব।
