
Oplus_131072
প্রতিনিধি অনুপম পাল
কৈলাসহর,ঊনকোটি ত্রিপুরা
ঊনকোটি জেলার কৈলাসহর কলাক্ষেত্রে সোমবার ১৭ই ফেব্রুয়ারি সমাজ কল্যাণ ও সমাজ শিক্ষা বিভাগের উদ্যোগে এক গুরুত্বপূর্ণ জেলা স্তরীয় সচেতনতামূলক কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়। এই কর্মসূচির মূল উদ্দেশ্য ছিল বিভিন্ন সরকারি কল্যাণমূলক প্রকল্প সম্পর্কে জনগণকে অবগত করা এবং তাদের সচেতনতা বৃদ্ধি করা। কর্মসূচিতে বিশেষভাবে আঙ্গনওয়াড়ি পরিষেবা, পোষণ ২.০, মিশন শক্তি, মিশন বাত্সল্য এবং প্রবীণ নাগরিক আইন—এই প্রকল্পগুলোর ওপর আলোকপাত করা হয়।
অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন সমাজ কল্যাণ ও সমাজ শিক্ষা, যুব বিষয়ক ও ক্রীড়া এবং শ্রম দপ্তরের মন্ত্রী টিংকু রায়। তিনি প্রদীপ প্রজ্জ্বলনের মাধ্যমে এই কর্মসূচির সূচনা করেন এবং তার ভাষণে জনগণের মধ্যে সরকারি প্রকল্পগুলোর গুরুত্ব তুলে ধরেন। তিনি বলেন— “সরকারের মূল লক্ষ্য হল সমাজের প্রতিটি স্তরের মানুষকে উন্নয়নের মূলস্রোতে নিয়ে আসা। বিশেষ করে শিশু, নারী ও প্রবীণ নাগরিকদের কল্যাণ নিশ্চিত করতেই সরকার একাধিক সামাজিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়নমূলক প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। এই প্রকল্পগুলোর সফল বাস্তবায়ন ও সুফল জনগণের কাছে পৌঁছে দিতে আমাদের সকলকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে।”
এই প্রকল্পগুলোর যথাযথ প্রয়োগের মাধ্যমে সমাজের দুর্বল ও পিছিয়ে পড়া অংশগুলোর জীবনমান উন্নত করা সম্ভব হবে। তিনি স্থানীয় প্রশাসন, জনপ্রতিনিধি, সমাজকর্মী এবং সাধারণ জনগণকে একযোগে কাজ করার আহ্বান জানান, যাতে প্রকল্পগুলোর সঠিক বাস্তবায়ন নিশ্চিত হয়।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন—সমাজকল্যাণ ও সমাজ শিক্ষা দপ্তরের অধিকর্তা তপন কুমার দাস,ঊনকোটি জেলার জেলাশাসক দিলীপ কুমার চাকমা,ঊনকোটি জেলা পরিষদের সভাধিপতি অমলেন্দু দাস,কৈলাসহর পুর পরিষদের চেয়ারপারসন চপলা দেবরায় সহ অন্যান্য প্রশাসনিক ও রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব। তাঁরা সকলেই সরকারি প্রকল্পগুলোর প্রয়োজনীয়তা এবং মানুষের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধির ওপর গুরুত্ব দেন।
অনুষ্ঠানে আলোচিত প্রকল্পগুলোর মধ্যে পোষণ ২.০ এবং মিশন শক্তি বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। পোষণ ২.০ মূলত শিশু ও মায়েদের পুষ্টি নিশ্চিত করার একটি বৃহৎ উদ্যোগ, যার মাধ্যমে অপুষ্টি দূরীকরণ এবং সুস্থ জীবনধারাকে উৎসাহিত করা হয়। মিশন শক্তি নারীদের ক্ষমতায়ন ও নিরাপত্তার ওপর গুরুত্ব দেয়, যাতে তাঁরা আত্মনির্ভরশীল হয়ে সমাজে অবদান রাখতে পারেন।মিশন বাত্সল্য প্রকল্পের মাধ্যমে শিশু সুরক্ষার বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়, যাতে পথশিশু ও অনাথ শিশুরা সুরক্ষা পায়।প্রবীণ নাগরিক আইন সম্পর্কে জনগণকে সচেতন করা হয়, যাতে বয়স্ক ব্যক্তিরা তাঁদের অধিকার ও সরকারি সুযোগ-সুবিধা সম্পর্কে অবগত হন এবং তাঁদের কল্যাণ নিশ্চিত করা যায়।
এই সচেতনতামূলক কর্মসূচিতে সরকারি আধিকারিক, সমাজকর্মী, অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী এবং বিভিন্ন স্তরের জনগণ উপস্থিত ছিলেন। অংশগ্রহণকারীরা বিভিন্ন প্রকল্প সম্পর্কে বিশদ তথ্য পান এবং দপ্তরের কর্মকর্তারা বিভিন্ন দিক বিস্তারিতভাবে ব্যাখ্যা করেন।
মন্ত্রী টিংকু রায় মিডিয়ার ভূমিকার ওপর বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করে বলেন—
“জনগণের মধ্যে সরকারি প্রকল্প সম্পর্কে যথাযথ তথ্য পৌঁছে দিতে মিডিয়ার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। সংবাদমাধ্যমের মাধ্যমে যদি এই সচেতনতা সারা রাজ্যে ছড়িয়ে দেওয়া যায়, তবে প্রকৃত সুবিধাভোগীরা এই প্রকল্পগুলোর সুফল পাবেন।”
এই সচেতনতামূলক কর্মসূচি সমাজের পিছিয়ে পড়া ও দুর্বল জনগোষ্ঠীর কাছে সরকারি প্রকল্পগুলোর বার্তা পৌঁছে দিতে এক গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। সরকারের পক্ষ থেকে এমন উদ্যোগ ভবিষ্যতেও নেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছে, যাতে সমাজের প্রতিটি মানুষ উন্নয়নের সুযোগ থেকে বঞ্চিত না থাকে।