
Oplus_131072
প্রতিনিধি অনুপম পাল,কৈলাসহর
উত্তর ত্রিপুরার ধর্মনগর শহরে অবৈধ অনুপ্রবেশের ঘটনা নতুন কিছু নয়, তবে সম্প্রতি ধরা পড়া চার রোহিঙ্গা ও দুই ভারতীয় দালালের ঘটনায় সীমান্ত সুরক্ষার দুর্বলতা আবারও স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। গতকাল বিকেল তিনটায় গোপন সূত্রে খবর পেয়ে বিএসএফ কৈলাসহর ব্রাঞ্চের জওয়ানরা ধর্মনগরের রাজবাড়ী এলাকার আইএসবিটি থেকে এই ছয়জনকে আটক করে। ধৃত রোহিঙ্গারা হলেন জাহির আলম (৩২), মমতাজুল হক (৩৫), মিনারা বেগম (১৮) ও এক নাবালিকা (১৫)। তারা মিয়ানমারের নাগরিক হলেও বাংলাদেশের রোহিঙ্গা ক্যাম্পে বসবাস করছিলেন। তাদের ভারতীয় দালালরা হলেন ঊনকোটি জেলার কৈলাসহরের আব্দুল মনির (৪৫) এবং যুবরাজ নগরের কামরুল হোসেন (৩০)।
ধৃতদের একজন জানান, মাথাপিছু ২৫ হাজার টাকা দিয়ে তারা দালালদের সাহায্যে কৈলাসহর সীমান্ত অতিক্রম করে ভারতে প্রবেশ করেছেন। তাদের উদ্দেশ্য ছিল বদরপুর হয়ে দিল্লি পৌঁছানো, যেখানে তারা কাজের সন্ধানে যেতে চেয়েছিলেন। বিএসএফের কাছে আগেই তথ্য ছিল যে কয়েকজন বাংলাদেশি নাগরিক বেআইনিভাবে সীমান্ত অতিক্রম করেছে, এবং সেই ভিত্তিতেই তারা অভিযান চালায়।
তবে এই পুরো ঘটনার মধ্যেই বেশ কিছু প্রশ্ন উঠছে। আটক হওয়ার পর সাধারণত সন্দেহভাজন অনুপ্রবেশকারীদের দ্রুত শারীরিক পরীক্ষা করা হয়। অথচ, বিএসএফ ১৪ মার্চ বিকেলে তাদের আটক করলেও, ১৫ মার্চ সকাল ১১টা নাগাদ টিআর-০১-এসি-১৫৮২ নম্বর গাড়ি দিয়ে কৈলাসহর আরজিএম হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে পরীক্ষা করায়। কেন এত বিলম্ব হলো, তা নিয়ে জনমনে সংশয় তৈরি হয়েছে। আরজিএম হাসপাতালের ডাক্তার সুমঙ্গল সরকার জানান,বিএসএফ এর তরফ থেকে ৬ জনকে শারিরীক পরীক্ষার জন্য নিয়ে আসা হয়েছিলো যার মধ্যে চারজন পুরুষ ও দুজন মহিলা। তাদের মধ্যে একজন নাবালিকা। প্রাথমিক স্বাস্থ্য পরীক্ষার পর তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
সীমান্তে নিরাপত্তা ব্যবস্থা কড়া না থাকলে এমন ঘটনা বারবার ঘটতে থাকবে। দালাল চক্রের সক্রিয়তার পাশাপাশি নিরাপত্তার ফাঁকফোকরও স্পষ্ট হচ্ছে। এই ধরনের অনুপ্রবেশ শুধু জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি নয়, স্থানীয় বাসিন্দাদের মাঝেও ভীতি সৃষ্টি করছে। তাই প্রশ্ন উঠছে, সীমান্ত সুরক্ষায় কি প্রশাসন যথেষ্ট উদ্যোগ নিচ্ছে? এ ধরনের ঘটনা ঠেকাতে আরও কঠোর নজরদারি ও কড়া পদক্ষেপ নেওয়ার সময় কি এখনও আসেনি?