
oplus_2
প্রতিনিধি অনুপম পাল,কৈলাসহর
আজ (৫ই মার্চ,২০২৫ ইং)বিকেল ৩টে নাগাদ কৈলাসহর পাইতুরবাজার স্থিত বৈদিক ব্রাহ্মণ সমাজের সংগঠনের অফিস গৃহে কৈলাশহরে বৈদিক ব্রাহ্মণ সমাজের প্রথম বিভাগীয় সম্মেলনকে কেন্দ্র করে অনুষ্ঠিত হয় এক সাংবাদিক সম্মেলন,উক্ত সাংবাদিক সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বৈদিক ব্রাহ্মণ সমাজের ঊনকোটি জেলা শাখার সম্পাদক বাসব ভট্টাচার্য্য,সহ সম্পাদক বিশ্বজীৎ গোস্বামী ,সহ সম্পাদক তপন কুমার ভট্টাচার্য্য,কোষাধ্যক্ষ কমলাকান্ত ভট্টাচার্য্য সহ অন্যান্যরা। সাংবাদিক সম্মেলনে বৈদিক ব্রাহ্মণ সমাজের সম্পাদক বাসব ভট্টাচার্য্য বলেন,কৈলাশহরের বৈদিক ব্রাহ্মণ সমাজ তাদের প্রথম বিভাগীয় সম্মেলনের আয়োজন করতে চলেছে, যা আগামী ৮ মার্চ ২০২৫, শনিবার অনুষ্ঠিত হবে। পাইতুরবাজারের নতুন মোটর স্ট্যান্ড সংলগ্ন এলাকায় আয়োজিত এই সম্মেলন শুধু সংগঠনের অভ্যন্তরীণ বিষয়েই সীমাবদ্ধ থাকবে না, বরং সমাজকল্যাণমূলক বিভিন্ন উদ্যোগকে আরও সুসংগঠিত ও বিস্তৃত করার লক্ষ্য স্থির করবে।
বৈদিক ব্রাহ্মণ সমাজ, যা ২০১৪ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়, দীর্ঘদিন ধরে ব্রাহ্মণ সম্প্রদায়ের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির সংরক্ষণ এবং সম্প্রদায়ের উন্নয়নে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। এই সংগঠন কখনোই কেবলমাত্র ধর্মীয় কর্মকাণ্ডের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকেনি, বরং সমাজের প্রতিটি স্তরে ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে চলেছে।
এই সম্মেলনের অন্যতম প্রধান আকর্ষণ হলো পৌরহিত্য কর্ম প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন। এই কেন্দ্র ব্রাহ্মণ সম্প্রদায়ের যুবকদের পৌরহিত্য বিদ্যায় দক্ষ করে তুলতে সাহায্য করবে, যা ভবিষ্যতে তাদের কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করবে। প্রশিক্ষণের মাধ্যমে ধর্মীয় রীতিনীতি সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারণা দেওয়ার পাশাপাশি ব্রাহ্মণ সম্প্রদায়ের ঐতিহ্য সংরক্ষণের একটি সুদৃঢ় ভিত্তি গড়ে তোলা হবে।
সম্মেলনে উপস্থিত থাকবেন সংগঠনের রাজ্য কমিটির সাধারণ সম্পাদক চন্দন চক্রবর্তী, পৌরহিত্য কর্ম প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের অধ্যক্ষ পণ্ডিত ভাস্কর চক্রবর্তী, রাজ্যের সংগঠন সম্পাদক সুধাংশু ভট্টাচার্য, উপদেষ্টা কমিটির সদস্যা ইন্দ্রাণী মুখার্জি সহ অন্যান্য বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব। সম্মেলনের মধ্য দিয়ে বিভাগীয় কমিটি এবং ছয়টি অঞ্চল কমিটি গঠন করা হবে, যা সংগঠনের পরবর্তী কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
বৈদিক ব্রাহ্মণ সমাজ ইতিপূর্বে নানা সমাজসেবামূলক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করেছে, যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য—মহালয়ার দিনে সকল সম্প্রদায়ের মহিলাদের বজ্রদান, বিভিন্ন দেবালয়ের পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা উদ্যোগ, শীতকালে চা-বাগানের শ্রমিকদের মধ্যে শীতবস্ত্র বিতরণ, অনাদরে পড়ে থাকা প্রতিমাগুলোর সম্মানজনক বিসর্জন, ব্রাহ্মণ পরিবারগুলোর সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়ে তোলা এবং বাংলাদেশে সংখ্যালঘু সনাতনীদের উপর নির্যাতনের প্রতিবাদে সরকারের কাছে ডেপুটেশন প্রদান।
এই উদ্যোগগুলোর মাধ্যমে সংগঠনটি সমাজের প্রতি তাদের দায়বদ্ধতার প্রমাণ রেখেছে। ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের সংরক্ষণের পাশাপাশি তারা যে মানবিক মূল্যবোধকে প্রাধান্য দেয়, তা সত্যিই প্রশংসনীয়। প্রথম বিভাগীয় সম্মেলনের আয়োজন নিঃসন্দেহে সংগঠনের ভবিষ্যৎ কর্মপন্থাকে আরও সুসংগঠিত করবে এবং ব্রাহ্মণ সমাজের ঐক্যকে আরও দৃঢ় করবে।
এই সম্মেলনের সফল আয়োজনের মধ্য দিয়ে সমাজসেবার এই পরম্পরা আরও বেগবান হবে, যা আগামী দিনে বৃহত্তর সমাজের জন্য কল্যাণ বয়ে আনবে বলে প্রত্যাশা করছেন মহকুমাবাসী।