
প্রতিনিধি অনুপম পাল, কৈলাসহর
কৈলাসহরের পার্শ্ববর্তী দেশ বাংলাদেশ মনু নদীর সীমান্ত সংলগ্ন এলাকায় অবৈধভাবে বাঁধ নির্মাণ শুরু করলে, বন্যা নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নতুন করে শঙ্কা দেখা দেয়। এই আশঙ্কা বিধানসভায় তুলেছিলেন কৈলাসহরের বিধায়ক বিরজীৎ সিনহা, আর সেই প্রসঙ্গ গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডঃ মানিক সাহা। মুখ্যমন্ত্রীর হস্তক্ষেপে রাজ্য ও কেন্দ্র সরকারের মধ্যে দ্রুত বার্তালাপ হয় এবং মনু নদী সংলগ্ন বাঁধগুলোর উচ্চতা বৃদ্ধির জন্য আদেশ দেওয়া হয়।
এরপর জল সম্পদ বিকাশ দপ্তরের(ডিভিশন-৬) তরফে বাঁধ পরিদর্শন করেন ডিপার্টমেন্ট সেক্রেটারি কিরণ গিত্তে ও চিফ ইঞ্জিনিয়ার। পরিদর্শনের মাত্র ১০ দিনের মধ্যেই ডাকা হয় ৪টি টেন্ডার। মাহি কনস্ট্রাকশন সেই টেন্ডারের মধ্যে ২টি কাজ পায়, যার আনুমানিক মূল্য ৬ কোটি ৫০ লক্ষ টাকা।২০২৪ সালের ৪ঠা মার্চ মাহি কনস্ট্রাকশনকে দেওয়া হয় দুটি ওয়ার্ক অর্ডার যার নম্বর যথাক্রমে—79/EE/WRD/VI/KLS/2024-2025 ও 80/EE/WRD/VI/KLS/2024-2025।
তিন মাসের নির্ধারিত সময়সীমার আগেই ৯০ শতাংশ কাজ সম্পন্ন করে ফেলে সংস্থাটি। কিন্তু তারপর থেকেই সৃষ্টি হয়েছে অচলাবস্থার। কারণ, এখনও পর্যন্ত প্রকল্পের কোনো এডমিনিস্ট্রেটিভ এপ্রুভাল দেওয়া হয়নি। এই বিষয়ে কনস্ট্রাকশনের তরফ থেকে জল সম্পদ বিকাশ দপ্তরের চিফ ইঞ্জিনিয়ারের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তাঁর সংক্ষিপ্ত উত্তর, “ফাইল আন্ডার প্রসেস” এমনটাই জানান মাহি কনস্ট্রাকশনের কর্ণধার আব্দুল মান্নান।
মাহি কনস্ট্রাকশনের কর্ণধার আব্দুল মান্নান ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন—“আমাদের হাতে ওয়ার্ক অর্ডার রয়েছে, কিন্তু আজ পাঁচ মাস পার হলেও দপ্তর থেকে এখনও পর্যন্ত প্রশাসনিক অনুমোদন দেওয়া হয়নি। চিফ ইঞ্জিনিয়ারের কাছে বারবার জানতে চাইলেও তিনি বলেন ‘ফাইল আন্ডার প্রসেস’। তাহলে আমরা বাকি দশ শতাংশ কাজ কীভাবে করব? এলাকাবাসী এখন সমস্যার মধ্যে পড়েছেন। বৃষ্টি হলেই কাদায় বাচ্চারা বাড়ি থেকে বের হতে পারছে না, যানবাহন চলাচল করতে পারছে না। বিভিন্ন জায়গায় বিক্ষোভও হচ্ছে। অথচ আমরা সরকারের নির্দেশেই আগেভাগে কাজ শুরু করেছিলাম।”
এই অবস্থায় মাহি কনস্ট্রাকশনের তরফে দাবি জানানো হয়েছে, অবিলম্বে প্রশাসনিক অনুমোদন দিয়ে অবশিষ্ট কাজ সম্পন্ন করার পরিবেশ তৈরি করুক দপ্তর। অন্যথায় এই প্রকল্প মাঝপথে থেমে যাওয়ার আশঙ্কা থেকে যাচ্ছে, যার ফল ভুগতে হবে স্থানীয় জনগণকেই।
এখন দেখার বিষয়, জল সম্পদ বিকাশ দপ্তর ও রাজ্য প্রশাসন কবে এই গুরুত্বপূর্ণ ফাইলের ‘প্রসেসিং’ শেষ করে বাস্তব সমাধানের পথে হাঁটে।