কৈলাসহর,প্রতিনিধি অনুপম পাল,ঊনকোটি জেলার হালাইমোড়ার দেও ও মনু নদীর সংযোগস্থল এখন এক নতুন দিগন্তের স্বপ্ন দেখাচ্ছে। রাজ্যের অন্যতম প্রাকৃতিক ও ধর্মীয় স্থানটি শিব গঙ্গা তীর্থক্ষেত্রে রূপান্তরিত হতে চলেছে। দীর্ঘদিনের অবহেলিত এই স্থান এখন রাজ্য সরকার ও সামাজিক সংগঠনগুলির উদ্যোগে ধর্মীয় ও পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে বিকশিত হচ্ছে।
দুই প্রধান নদী মনু ও দেও পাহাড়ি অঞ্চলে উৎপন্ন হয়ে কুমারঘাটের হালাইমোড়ায় মিলিত হয়েছে। স্থানীয়দের বিশ্বাস, উত্তরবাহি নদী অত্যন্ত পবিত্র, যেখানে তর্পণ, অস্থি বিসর্জনসহ ধর্মীয় কাজ সম্পন্ন করলে স্বর্গের পথ সুগম হয়। হিন্দু ধর্মের অনুসারীদের কাছে এই স্থান তাই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
২০১৯ সালে হেরিটেজ অর্গানাইজেশন দুই নদীর সংযোগস্থলে গঙ্গা মাতার পাথরের প্রতিমা স্থাপনের উদ্যোগ নেয়। যদিও তহবিলের অভাবে কাজ থমকে গিয়েছিল, পরবর্তীতে রাজ্য সরকারের হস্তক্ষেপ ও স্থানীয় বিধায়ক ভগবান চন্দ্র দাসের উদ্যোগে বল্লভভাই প্যাটেলের একটি মূর্তি স্থাপন করা হয়। বর্তমানে এই এলাকায় ধর্মীয় কার্যকলাপ ও পর্যটনের প্রতি মানুষের আকর্ষণ দিন দিন বাড়ছে।
উক্ত বিষয় নিয়ে হেরিটেজ অর্গানাইজেশনের উদ্যোগে এক গঙ্গা পূজা ও আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে রাজ্যের বিশিষ্ট ব্যক্তিরা অংশগ্রহণ করেন এবং এই স্থানকে আরও উন্নততর পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলার পরিকল্পনা নেওয়া হয়। আলোচনায় সিদ্ধান্ত হয় যে, আগামী ২৭ মার্চ বারুণী মেলার দিন আনুষ্ঠানিকভাবে গঙ্গা মাতার পাথরের প্রতিমা স্থাপন করা হবে।
গঙ্গা প্রতিমার উদ্বোধন উপলক্ষে তিন দিনের এক বিশেষ মেগা কর্মসূচি আয়োজনের সিদ্ধান্ত হয়েছে, যেখানে থাকবে গঙ্গা পূজা, গঙ্গা স্নান ও মেলা। একটি ২১ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠিত হয়েছে কর্মসূচি সফল করার জন্য। প্রধান পৃষ্ঠপোষক হিসেবে বিধায়ক ভগবান চন্দ্র দাস এবং চেয়ারম্যান হিসেবে সুদর্শন বৈদ্য দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন।
এই তীর্থক্ষেত্রের উন্নয়নে স্থানীয় বাসিন্দারা অত্যন্ত আশাবাদী। তাঁরা সকলের কাছে সহযোগিতা কামনা করেছেন, যাতে এই পবিত্র স্থানটি এক উল্লেখযোগ্য ধর্মীয় ও পর্যটন কেন্দ্রে পরিণত হয়।
ঊনকোটি জেলার শিব গঙ্গা তীর্থক্ষেত্রের এই উন্নয়ন কার্যক্রম একদিকে ধর্মীয় মূল্যবোধকে তুলে ধরছে, অন্যদিকে পর্যটনের মাধ্যমে অর্থনৈতিক অগ্রগতির পথও প্রশস্ত করবে বলে আশাবাদী জেলাবাসী।