প্রতিনিধি অনুপম পাল
কৈলাসহর,ঊনকোটি ত্রিপুরা
রাজ্যব্যাপী বিজেপির জেলা সভাপতি নির্বাচন নিয়ে চলছে টানটান উত্তেজনা। মুখ্যমন্ত্রী, প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী, রাজ্য সভাপতি এবং রাজ্য প্রভারী ড. রাজদীপ রায়ের একাধিক বৈঠকের পরও জেলা সভাপতি চয়ন নিয়ে কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে পৌঁছতে পারেননি দলীয় নেতৃত্ব। ফলে এবার মনোনয়ন দাখিলের মাধ্যমে নির্বাচন আয়োজনের পথ বেছে নিয়েছে রাজ্য নেতৃত্ব।
দলের অন্দরমহলের খবর অনুযায়ী, প্রতিটি শীর্ষ নেতা নিজস্ব প্যানেলের লোককে জেলা সভাপতি করতে আগ্রহী। এর ফলে কোনো একক সিদ্ধান্তে পৌঁছানো সম্ভব হয়নি। এই পরিস্থিতি রাজ্যের অন্যান্য জেলার মতো ঊনকোটি জেলাতেও লক্ষ করা যাচ্ছে।
আজ ঊনকোটি জেলার কৈলাসহর বিজেপি জেলা কার্যালয়ে জেলা সভাপতি পদের দাবিদার হিসেবে পাঁচজন মনোনয়ন জমা দিয়েছেন। মনোনয়ন প্রক্রিয়া পরিচালনা করেন ঊনকোটি জেলার জেলা সভাপতি নির্বাচনের ডিআরও তাপস মজুমদার। উপস্থিত ছিলেন বর্তমান জেলা সভাপতি পবিত্র দেবনাথ, বরিষ্ঠ কার্যকর্তা বিধান দাসসহ দলের অন্যান্য নেতা।
মনোনয়ন দাখিলের প্রক্রিয়া শুরুর আগে ভারত মায়ের প্রতিকৃতির সামনে প্রদীপ প্রজ্বলনের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের সূচনা করা হয়। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখতে গিয়ে বর্তমান জেলা সভাপতি পবিত্র দেবনাথ বলেন, “যদি সকলে একসাথে আলোচনা করে একজন প্রার্থীর নাম রাজ্য কমিটির কাছে পাঠাতে পারেন, তবে ঊনকোটি জেলা থেকে একটি শক্তিশালী বার্তা যাবে। কিন্তু বর্তমান জেলা সভাপতি বললেও দলীয় ঐক্যের বদলে পাঁচজন মনোনয়নপত্র তোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।”
ঊনকোটি জেলার তিনটি বিধানসভা কেন্দ্র থেকে মনোনয়ন জমা পড়েছে। যারা মনোনয়ন জমা দিলেন তারা হলেন,বিমল কর (৬১) চণ্ডীপুর বিধানসভা কেন্দ্র,অরুণ সাহা (৫৩) কৈলাসহর বিধানসভা কেন্দ্র,নীতিশ দে (৫০) কৈলাসহর বিধানসভা কেন্দ্র,দীপঙ্কর গোস্বামী (৪৫) পাবিয়ছড়া বিধানসভা কেন্দ্র,অনিমেষ সিনহা (৬১) পাবিয়ছড়া বিধানসভা কেন্দ্র। তবে ফটিকরায় বিধানসভা কেন্দ্র থেকে কেউ মনোনয়ন দাখিল করেননি।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, আগামীকাল রাজ্য কমিটি থেকে নতুন জেলা সভাপতির নাম ঘোষণা করা হতে পারে। পাঁচজন প্রার্থীর মধ্যে কে হাসবেন শেষ হাসি, তা এখন দেখার বিষয়। দলের অভ্যন্তরীণ টানাপোড়েন এবং জেলা সভাপতির মনোনয়নে রাজ্য নেতৃত্বের ভূমিকা আগামী দিনে বিজেপির সংগঠনের গতিপ্রকৃতি নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলবে।
জেলা সভাপতির চূড়ান্ত নাম ঘোষণা একদিকে যেমন দলীয় ঐক্যের বার্তা দিতে পারে, তেমনই তা নিয়ে তৈরি হতে পারে নতুন রাজনৈতিক মেরুকরণ। এখন দেখার বিষয়, দলের সর্বোচ্চ নেতৃত্ব কীভাবে এই পরিস্থিতির সমাধান করে এবং বিজেপি সংগঠনের ভিত আরও মজবুত করে।