প্রতিনিধি অনুপম পাল
কৈলাসহর,ঊনকোটি ত্রিপুরা
প্রতিবছরের মতো এবারও শৈবতীর্থ ঊনকোটিতে অনুষ্ঠিত হলো মকর সংক্রান্তি মেলা। কৈলাসহর মহকুমা প্রশাসন, তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তর, গৌরনগর এবং চণ্ডীপুর ব্লকের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত এই মেলা শুধুমাত্র ধর্মীয় নয়, বরং ঐতিহ্য এবং সংস্কৃতির মেলবন্ধন হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে।
প্রদীপ প্রজ্জ্বলনের মাধ্যমে মেলার শুভ সূচনা করেন জেলা পরিষদের সভাধিপতি অমলেন্দু দাস। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিধায়ক বিরজিৎ সিনহা, জেলা পরিষদের সদস্য বিমল কর এবং শ্যামল দাস, সহ-অধিকর্তা বিশ্বজিৎ দেব, মহকুমা কল্যাণ আধিকারিক মতিরঞ্জন দেববর্মা, এবং সমাজকর্মী পিন্টু ঘোষ ও প্রীতম ঘোষ। অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন কৈলাসহর পুর পরিষদের চেয়ারপার্সন চপলা রানী দেবরায়।
মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তারা ঊনকোটির ভাস্কর্য ও ঐতিহ্যবাহী শিল্পকলার গুরুত্বের কথা তুলে ধরেন। ঊনকোটি শৈবতীর্থ হিসেবে পরিচিত এবং এর প্রাচীন শিলালিপি ও ভাস্কর্যগুলি ত্রিপুরার সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের প্রতীক। বক্তারা এই প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শনগুলির রক্ষণাবেক্ষণ এবং পর্যটকদের আকৃষ্ট করার জন্য আরও উদ্যোগ গ্রহণের আহ্বান জানান।
ঊনকোটিকে আরও আকর্ষণীয় পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়ার (এএসআই) ভূমিকা এবং দায়িত্ব নিয়ে আলোচনা করা হয়। বক্তারা স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় করে পর্যটকদের জন্য উন্নত পরিষেবা এবং পরিকাঠামো তৈরি করার উপর গুরুত্ব আরোপ করেন।
মকর সংক্রান্তি উপলক্ষে মেলার মূল আকর্ষণ ছিল স্থানীয় এবং পার্শ্ববর্তী অঞ্চল থেকে আসা শিল্পীদের সাংস্কৃতিক পরিবেশনা। কমলপুর, কুমারঘাট এবং ধর্মনগর থেকে আগত শিল্পীরা তাদের পরিবেশনার মাধ্যমে মেলার সাংস্কৃতিক দিককে সমৃদ্ধ করেন। পাশাপাশি, সারারাতব্যাপী পদাবলী কীর্তনের আয়োজন পুন্যার্থীদের মনোমুগ্ধ করে তোলে।
প্রতি বছর মকর সংক্রান্তির পাশাপাশি বাসন্তী পূজার সময় অশোকাষ্টমী মেলা অনুষ্ঠিত হয় এই শৈবতীর্থ ঊনকোটিতে। এই ধরনের মেলাগুলি শুধু ধর্মীয় আয়োজন নয়, বরং স্থানীয় ঐতিহ্য এবং সংস্কৃতির ধারাবাহিকতা রক্ষার এক অনন্য উদাহরণ।