ইউনাইটেড ত্রিপুরা আগরতলা প্রতিবেদন অনুপম পাল, উত্তর-পূর্বাঞ্চলের উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির লক্ষ্যে ত্রিপুরার আগরতলার প্রজ্ঞা ভবনে শুরু হয়েছে উত্তর-পূর্ব পরিষদের (NEC) ৭২তম পূর্ণাঙ্গ সেশন। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এই গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকের উদ্বোধন করেন। উপস্থিত ছিলেন ডোনার মন্ত্রী জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া, ডোনার প্রতিমন্ত্রী ড. সুকান্ত মজুমদার, এবং উত্তর-পূর্বাঞ্চলের আটটি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী, রাজ্যপাল ও উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা।
এনইসি সেশনের মূল লক্ষ্য ছিল উত্তর-পূর্বাঞ্চলের পরিকাঠামো উন্নয়ন, অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি, যুবশক্তির যথাযথ ব্যবহার, এবং পরিবেশ সংরক্ষণ। বৈঠকে বিশেষ জোর দেওয়া হয় সীমান্ত বাণিজ্য উন্নয়ন এবং নিরাপত্তা ব্যবস্থার ওপর। অমিত শাহ বলেন, “উত্তর-পূর্বাঞ্চল এখন আর কেবল ভাষণের বিষয় নয়, এটি আজ উন্নয়নের এক উজ্জ্বল উদাহরণ।”
তিনি জানান, গত দশ বছরে উত্তর-পূর্বাঞ্চলে পরিকাঠামোগত উন্নয়ন অভূতপূর্ব উচ্চতায় পৌঁছেছে। উন্নত সড়ক, রেল, বিমানবন্দর এবং ডিজিটাল পরিকাঠামো গড়ে তোলার মাধ্যমে দিল্লীর সাথে এই অঞ্চলের দূরত্ব কমানো হয়েছে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী উল্লেখ করেন, বিগত দশ বছরে প্রায় ৯ হাজার বৈরী অস্ত্রধারী স্বাভাবিক জীবনে ফিরে এসেছেন। কেন্দ্রীয় সরকারের বিভিন্ন শান্তি চুক্তি এবং উদ্যোগ এই অঞ্চলে শান্তি স্থাপনে ভূমিকা রেখেছে। এছাড়া, উত্তর-পূর্বাঞ্চলকে পর্যটনের গন্তব্য হিসেবে বিশ্বদরবারে তুলে ধরার জন্য ব্যাপক উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
অমিত শাহ জানান, অসমে টাটা সেমিকন্ডাক্টর এসেম্বলি এন্ড প্রাইভেট লিমিটেড ২৭ হাজার কোটি টাকার বিনিয়োগ করতে চলেছে। এটি এই অঞ্চলে সবচেয়ে বড় বিনিয়োগ হতে চলেছে। তিনি বলেন, বড়ো বিনিয়োগ উত্তর-পূর্বাঞ্চলের অর্থনৈতিক উন্নয়নের মূল চালিকা শক্তি।
উত্তর-পূর্বাঞ্চলের ভাষা, সাহিত্য ও সংস্কৃতিকে ঐতিহ্যের অংশ বলে উল্লেখ করেন অমিত শাহ। তিনি বলেন, “উন্নয়ন শুধুমাত্র পরিকাঠামোতে সীমাবদ্ধ নয়। শান্তি ও সমৃদ্ধির সঙ্গে এই অঞ্চলের সাহিত্য, ভাষা ও সংস্কৃতিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে।”
অমিত শাহ জানান, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে গত দশ বছরে উত্তর-পূর্বাঞ্চল উন্নয়নের এক নতুন দিশায় এগিয়েছে। তিনি উল্লেখ করেন, প্রধানমন্ত্রী নিজে ৬৫ বার এই অঞ্চলে সফর করেছেন এবং প্রতিবার নতুন প্রকল্পের সূচনা করেছেন।
উত্তর-পূর্বাঞ্চলের উন্নয়ন কেন্দ্রীয় সরকারের অগ্রাধিকারের তালিকায় শীর্ষে। NEC-র এই বৈঠক উত্তর-পূর্বাঞ্চলের উন্নয়ন, শান্তি ও সমৃদ্ধির লক্ষ্যে একটি সুসংহত রোডম্যাপ তৈরি করবে। উন্নত পরিকাঠামো, বিনিয়োগ, এবং সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য রক্ষার মাধ্যমে এই অঞ্চলকে জাতীয় উন্নয়নের মূলধারায় নিয়ে আসার সংকল্প নিয়েছে কেন্দ্র।