
প্রতিনিধি অনুপম পাল,কৈলাসহর
ত্রিপুরা রাজ্যের উত্তর জেলার ধর্মনগর মহকুমায় বুধবার বিকেল ও সন্ধ্যায় মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডঃ মানিক সাহার হাত ধরে একগুচ্ছ উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন ও শিলান্যাস সম্পন্ন হয়। একই সঙ্গে সূচনা হয় রাজ্য ভিত্তিক যাত্রা উৎসবেরও। দিনভর কর্মসূচিতে মুখ্যমন্ত্রী জেলার চুয়াল্লিশটি উন্নয়ন প্রকল্প ভার্চুয়ালি উদ্বোধন করেন এবং যাত্রা উৎসবের শুভ সূচনা করেন।
এদিন মুখ্যমন্ত্রী এক্সপ্রেস ট্রেনে আগরতলা থেকে এসে সরাসরি বাগবাসা বিধানসভা কেন্দ্রের লালছড়া এলাকায় নবনির্মিত জেলা পঞ্চায়েত রিসোর্স সেন্টারের উদ্বোধন করেন। এরপর মূল মঞ্চে আয়োজিত অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রীকে সংবর্ধনা জানানো হয় বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের পক্ষ থেকে। অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন বিধানসভার অধ্যক্ষ ও ধর্মনগরের বিধায়ক বিশ্ববন্ধু সেন, যুব বিষয়ক ও ক্রীড়া দপ্তরের মন্ত্রী টিংকু রায়, বাগবাসার বিধায়ক যাদব লাল নাথ, জেলা শাসক চাঁদনী চন্দ্রন, পুলিশ সুপার অবিনাশ রাই, সভাধিপতি অপর্ণা নাথ সহ অন্যান্য ব্যক্তিবর্গ।
অনুষ্ঠানের শুরুতেই কদমতলা ও কালাছড়া ব্লককে প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার সফল বাস্তবায়নের জন্য সংবর্ধনা প্রদান করা হয়। পাশাপাশি বিভিন্ন গ্রাম পঞ্চায়েতের জনপ্রতিনিধিদের পুরস্কৃত করা হয় বিভিন্ন ক্ষেত্রে অবদানের জন্য।
মুখ্যমন্ত্রী তাঁর প্রায় ৪৫ মিনিটের বক্তব্যে রাজ্যের সার্বিক উন্নয়ন নিয়ে আলোচনা করেন। তিনি জানান, উত্তর জেলার বিভিন্ন সরকারি বিদ্যালয়ে পাকা ভবন নির্মাণ, গ্রামীণ রাস্তাঘাট উন্নয়ন, স্বাস্থ্য পরিকাঠামো উন্নয়ন ইত্যাদি মিলিয়ে মোট চুয়াল্লিশটি প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছে বা সম্পন্ন হয়েছে। বিরোধীদের কটাক্ষের জবাবে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “উন্নয়ন চোখে পড়ে না যাদের, তারাই আজ বিভ্রান্তি ছড়াতে ব্যস্ত। অথচ ত্রিপুরা আজ জাতীয় স্তরে নানা পুরস্কারে ভূষিত।”
তিনি আরও জানান, বালিকা যোজনা, মানসিক ভারসাম্যহীনদের ভাতা বৃদ্ধি সহ নানা জনমুখী প্রকল্প রাজ্যে ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে। সম্প্রতি সমাপ্ত বাজেট অধিবেশনে গৃহীত সিদ্ধান্তের উল্লেখ করে তিনি বলেন, এই উদ্যোগগুলি রাজ্যের ভবিষ্যৎ উন্নয়নের ভিত্তি রচনায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
এদিন সন্ধ্যায় ধর্মনগর বিবেকানন্দ সার্ধ শতবার্ষিকী ভবনে তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তরের উদ্যোগে রাজ্যভিত্তিক যাত্রা উৎসবের উদ্বোধন করেন মুখ্যমন্ত্রী। প্রদীপ প্রজ্বালনের মাধ্যমে যাত্রা উৎসবের সূচনা হয়। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন মন্ত্রী টিংকু রায়, অধ্যক্ষ বিশ্ববন্ধু সেন, জেলা শাসক, পুলিশ সুপার সহ অনেকে। আগামী ২৩ এপ্রিল পর্যন্ত চলবে এই যাত্রা উৎসব। প্রতিদিন সন্ধ্যা ৬টা থেকে অনুষ্ঠান শুরু হবে এবং ত্রিপুরার তেরোটি যাত্রা দল এতে অংশগ্রহণ করবে। রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে প্রতিটি দলকে ৫০,০০০ টাকা করে আর্থিক অনুদান দেওয়া হবে।
যাত্রাপালায় থাকছে লালন ফকির, বেহুলা লক্ষিন্দর, নটী বিনোদিনী, জীবন নদীর তীরে, সিঁদুর দিয়ে কিনলাম সহ একাধিক জনপ্রিয় ও মনোমুগ্ধকর পরিবেশনা।এই সমগ্র আয়োজন ধর্মনগরবাসী তথা উত্তর জেলার মানুষের মধ্যে উৎসাহ ও আশার সঞ্চার করেছে।