
oplus_0
প্রতিনিধি অনুপম পাল,আগরতলা
আগরতলা, ৬ এপ্রিল,দীর্ঘদিন সাংবাদিকতা করেও প্রেস ক্লাবের সদস্যপদ থেকে বঞ্চিত। অভিযোগ—যোগ্যতা নয়, প্রেস ক্লাবে সদস্য হওয়ার মাপকাঠি হয়ে উঠেছে “ঘনিষ্ঠতা” ও “ব্যক্তি পছন্দ”। আর এই নিয়ে আজ উত্তাল হয়ে উঠল আগরতলা প্রেস ক্লাবের প্রাঙ্গণ। ক্লাবের প্রাক্তন সভাপতি ও প্রাক্তন সম্পাদকের বিরুদ্ধে সরাসরি স্লোগান তুললেন কয়েকজন বঞ্চিত সাংবাদিক।
সাংবাদিকরা দাবি তুলেছেন—যাঁরা বহু বছর ধরে সংবাদমাধ্যমে কাজ করছেন, মাঠে নেমে খবর সংগ্রহ করছেন, তাঁদের সদস্যপদ দেওয়া হচ্ছে না, অথচ যাঁরা সাংবাদিকতার সাথে নিয়মিত যুক্ত নন, তাঁদের নাম জায়গা করে নিচ্ছে তালিকায়। প্রশ্ন উঠছে—তবে কি সদস্যপদ এখন “পেশাগত যোগ্যতা” নয়, বরং “ব্যক্তিগত যোগাযোগ” বা অন্য কোনো সুবিধার বিনিময়ে বিলি হচ্ছে?
বিক্ষোভরত সাংবাদিকদের মধ্যে একজন জানান, “প্রেস ক্লাব মানে সাংবাদিকদের সম্মানের জায়গা, এখানে যদি স্বজনপোষণ আর গোপন লেনদেন চলে, তাহলে সাধারণ সাংবাদিক কোথায় দাঁড়াবে?” তাঁর কথায় ঝরে পড়ছে দীর্ঘদিনের ক্ষোভ।
প্রাক্তন সভাপতি ও সম্পাদক, যাঁরা একসময় ক্লাব পরিচালনায় ছিলেন, তাঁদের ভূমিকা নিয়েও উঠেছে প্রশ্ন। তাঁদের সময়ে সদস্যপদের তালিকায় অস্বচ্ছতা এবং পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ তুলেছেন আন্দোলনকারীরা। তাঁরা এও দাবি করেছেন, ক্লাবের কার্যনির্বাহী কমিটির ভেতরেও অগণতান্ত্রিক সিদ্ধান্ত এবং ‘বন্ধু মহলে’ সুবিধা পাইয়ে দেওয়ার প্রবণতা বৃদ্ধি পেয়েছে।
সাংবাদিকরা দাবি করেছেন, অবিলম্বে সদস্যপদ প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা আনা হোক, এবং ক্লাব পরিচালনায় গণতান্ত্রিক রীতি ও নীতিমালা অনুসরণ করা হোক। তাঁরা বলেছেন, দরকার হলে তাঁরা তথ্য অধিকার আইনের মাধ্যমে সদস্যপদ সংক্রান্ত নথিপত্র প্রকাশে বাধ্য করবেন কর্তৃপক্ষকে।
এই ঘটনা আবারও প্রশ্ন তোলে—“সংবাদ পরিবেশন যারা করেন, তাঁদের কণ্ঠস্বর কি নিজ ক্লাবেই রুদ্ধ হয়ে থাকবে?”
যেখানে সাংবাদিকদের সংগঠনেই যদি স্বচ্ছতা না থাকে, তাহলে গণতন্ত্রের অন্য স্তরে কীভাবে স্বচ্ছতার বার্তা পৌঁছবে?
দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ শুধু রাজনৈতিক বা প্রশাসনিক স্তরে নয়—সাংবাদিকদের নিজেদের প্রতিষ্ঠানেও সেই আওয়াজ উঠছে, আর আজকের বিক্ষোভ ছিল তারই জ্বলন্ত উদাহরণ।