
প্রতিনিধি, অনুপম পাল, কৈলাশহর
চিকিৎসার আশায় ভারতে এসে প্রাণ হারালেন বাংলাদেশের মৌলভীবাজার জেলার সদর থানার বাসিন্দা স্বপ্না শুক্ল বৈদ্য (৭৩)। দীর্ঘ প্রশাসনিক জটিলতার অবসান ঘটিয়ে অবশেষে তিন দিন পর আজ ১৫ই সেপ্টেম্বর তাঁর মরদেহ স্বদেশের মাটিতে ফিরে গেল। সীমান্ত জুড়ে এই মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়তেই নেমে আসে গভীর শোকের ছায়া।
পরিবার সূত্রে জানা গেছে, কয়েক সপ্তাহ আগে শারীরিক অসুস্থতার কারণে চেন্নাইয়ের এক বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে আসেন স্বপ্না দেবী। চিকিৎসা শেষে তিনি উত্তর ত্রিপুরার ধর্মনগরে মেয়ের বাড়িতে অবস্থান করছিলেন। কিন্তু ভাগ্যের নির্মম পরিহাসে গত ১২ সেপ্টেম্বর হঠাৎ হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।মৃত্যুর পর পরিবারের বেদনা আরও বাড়ায় সীমান্ত পারাপারের দীর্ঘ কাগজপত্রের প্রক্রিয়া। স্বজনরা চোখের জলে অপেক্ষা করলেও মরদেহ দ্রুত দেশে পাঠানো সম্ভব হয়নি। অবশেষে সমস্ত আনুষ্ঠানিকতা সম্পূর্ণ হওয়ার পর সোমবার কৈলাশহর ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট হয়ে মরদেহ বাংলাদেশের উদ্দেশ্যে পাঠানো হয়।ভারতীয় সীমান্ত সুরক্ষা বাহিনী (বিএসএফ) মরদেহটি আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশের বর্ডার গার্ড (বিজিবি)-এর কাছে হস্তান্তর করে। সীমান্তে এসে অপেক্ষা করছিলেন বাংলাদেশে থাকা তাঁর নিকটাত্মীয়রা। আর ভারত থেকেও বহু স্বজন শেষবারের মতো প্রিয়জনকে বিদায় জানাতে উপস্থিত হন।স্বপ্না দেবীর এক আত্মীয় কাঁদতে কাঁদতে বলেন, “চেন্নাইয়ে চিকিৎসা শেষে সুস্থ হয়ে হাসিমুখে দেশে ফেরার কথা ছিল, কিন্তু ফিরলেন কফিনে বন্দী হয়ে। এই শোক আমরা কোনোদিন ভুলতে পারবো না।”
চিকিৎসার আশায় ভারতে এসে এভাবে প্রাণ হারানো স্বপ্না দেবীর মৃত্যু দুই দেশের সীমান্তবাসীর হৃদয়ে এক বেদনাদায়ক স্মৃতি হয়ে রইল।