কৈলাসহর,প্রতিনিধি অনুপম পাল,কৈলাসহর লায়ন্স ক্লাব ও লিও ক্লাবের উদ্যোগে এবং জেলা অন্ধত্ব নিবারণী সমিতির সহায়তায় কৈলাসহর ভগবান নগর জেলা হাসপাতালে অনুষ্ঠিত হয় দুদিনব্যাপী মেগা চক্ষু অপারেশন শিবির। এই উদ্যোগের মূল লক্ষ্য ছিল ছানি রোগীদের বিনামূল্যে চিকিৎসা প্রদান করে তাদের দৃষ্টিশক্তি ফিরিয়ে দেওয়া।
চক্ষু সনাক্তকরণ থেকে অপারেশন
শিবিরের অংশ হিসেবে গত ৩০ ও ৩১ ডিসেম্বর কুমারঘাট মহকুমা হাসপাতাল ও কৈলাসহর জেলা হাসপাতালে চক্ষু সনাক্তকরণ শিবির আয়োজিত হয়। সনাক্তকৃত ছানি রোগীদের ঊনকোটি জেলা হাসপাতালে অপারেশন করা হয়। রোগীদের আনা-নেওয়া, লেন্স সরবরাহ, ওষুধ প্রদানসহ সমস্ত ব্যবস্থা লায়ন্স ক্লাব বিনামূল্যে করেছে।
শিবিরে চক্ষু বিশেষজ্ঞদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন আগরতলার ডা. পারুলদিপ চাকমা, ডা. ছন্দম আচার্য্য, ডা. সুমন সরকার, ডা. প্রিয়াংকা কুমারী, ডা. শ্রীলক্ষী রাজ, ও ডা. দেবল কিশোর পাল। স্থানীয় বিশেষজ্ঞ হিসেবে ছিলেন ডা. সত্যজিৎ পাল। এছাড়াও শিবিরকে সফল করতে সহযোগিতা করেন ডা. রবীন্দ্র দাস, ডা. রোহন পাল, এবং ডা. সঞ্জনা ঘোষ (দাস)।
দুদিনে মোট ১৪৯ জন রোগীর ছানি অপারেশন করা হয়। আশি শতাংশ রোগীই ছিলেন বয়স্ক মহিলারা। এর মধ্যে একজন ৯৮ বছর বয়সী মহিলা ছিলেন, যিনি পরিবারের কোনো সদস্য ছাড়াই এসেছিলেন। ক্লাবের সদস্যরা তার পরিচর্যার দায়িত্ব নেন। একইভাবে, যেসব রোগীর পরিবার থেকে কেউ উপস্থিত ছিলেন না, তাদের যত্নের দায়িত্বও ক্লাব সদস্যরা পালন করেন।
শিবিরে শুধু রাজ্যের রোগীরাই নয়, আসামের রোগীরাও তাদের ছানি অপারেশন করিয়েছেন। এই উদ্যোগ দেখিয়েছে, সেবার সীমা শুধু একটি অঞ্চল বা রাজ্যেই সীমাবদ্ধ নয়।
কৈলাসহর লায়ন্স ক্লাব ও লিও ক্লাবের সদস্যদের পাশাপাশি কুমারঘাট লায়ন্স ক্লাব, হাসপাতালের চক্ষু বিভাগ, অন্যান্য বিভাগের নার্স এবং স্থানীয় চিকিৎসকরা শিবির সফল করতে অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন।
ক্লাবের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, ভবিষ্যতেও এমন মানবিক উদ্যোগ তারা চালিয়ে যাবে। তাদের এই প্রচেষ্টা স্থানীয়দের মধ্যে প্রশংসিত হয়েছে এবং সেবা কার্যক্রমের এক দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।
এই চক্ষু শিবির শুধু একটি চিকিৎসা সেবা নয়, বরং মানবিকতার উদাহরণ এবং মানুষের জীবনে দৃষ্টিশক্তি ফিরিয়ে দেওয়ার এক অনন্য প্রয়াস।