
প্রতিনিধি শুভঙ্কর দাস,কৈলাসহর
কৈলাসহর: এক গৃহবধূর মৃত্যুর অভিযোগের তদন্ত করতে বুধবার কৈলাসহর দুর্গাপুর এলাকায় মৃত গৃহবধূর বাপের বাড়িতে পৌঁছালেন রাজ্য মহিলা কমিশনের প্রতিনিধিরা।
প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের ৬ জানুয়ারি কৈলাসহরের শ্রীনাথপুর এলাকায় জাহানারা বেগম নামে এক গৃহবধূর ঝুলন্ত মৃতদেহ উদ্ধার হয়। পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়, তার শ্বশুরবাড়ির লোকেরা তাকে হত্যার পর ফাঁসিতে ঝুলিয়ে রেখেছিল। ঘটনার পর জাহানারা বেগমের পরিবারের সদস্যরা তার স্বামীর বাড়ির পাঁচজনের বিরুদ্ধে ইরানি থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। পুলিশ ইতোমধ্যে তিনজনকে গ্রেফতার করলেও বাকি দুই অভিযুক্ত এখনও পলাতক।
জাহানারা বেগমের পরিবার সূত্রে জানা যায়, গত বছরের জানুয়ারি মাসে শ্রীনাথপুর এলাকার বাসিন্দা আসরাফুল ইসলামের সঙ্গে তার বিয়ে হয়। বিয়ের কিছুদিন পর থেকেই তার ওপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন শুরু হয়। অভিযোগ, স্বামীর পরিবার তাকে বাপের বাড়ি থেকে নগদ আড়াই লক্ষ টাকা এনে দেওয়ার জন্য চাপ দিতে থাকে। একপর্যায়ে চলতি বছরের ৪ জানুয়ারি জাহানারা বেগম এক লক্ষ টাকা এনে শ্বশুরবাড়ির হাতে তুলে দেন। তবে পারিবারিক অশান্তি বন্ধ হয়নি।
৬ জানুয়ারি হঠাৎ জাহানারার মৃত্যুসংবাদ পেয়ে তার বাপের বাড়ির লোকেরা ছুটে যান শ্বশুরবাড়িতে। পরে তারা ইরানি থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। পাশাপাশি ন্যায়বিচারের আশায় তারা রাজ্য মহিলা কমিশনের কাছেও লিখিত অভিযোগ করেন।
বুধবার রাজ্য মহিলা কমিশনের কাউন্সিলর মান্না সাহা এবং সদস্যা নমিতা দেববর্মা মৃত গৃহবধূর পরিবারের সঙ্গে দেখা করেন এবং বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করেন। তারা পরিবারের প্রতি সহমর্মিতা প্রকাশ করেন এবং আশ্বাস দেন যে বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখা হবে।
গোটা ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকায় তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। জাহানারা বেগমের পরিবারের সদস্যরা অভিযুক্তদের দ্রুত গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন। পুলিশ ও মহিলা কমিশনের তদন্তে সত্যতা প্রকাশ পেলে দোষীদের কঠোর শাস্তির আওতায় আনা হবে বলে প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।